খুলনায় রেলের ফিসপ্লেট খোলার সময় হাতে নাতে ধরা পড়েছে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর
লিখেছেন লিখেছেন দেখা হবে বিজয়ে ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১২:৫০:৩৬ দুপুর
খুলনা মহানগরীর নয়াবাটি এলাকায় রেল লাইনের ফিসপ্লেট খুলে ফেলার সময় মেহেদী হাসান জাহাঙ্গীর (২৬) নামের এক যুবলীগ নেতাকে হাতে নাতে ধরে এলাকাবাসী গণপিটুনী দিয়ে পুলিশী সোপর্দ করেছে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে।
পরে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে তার সাথে কথা বলতে চাইলে সে এখানে নেই বলে অজ্ঞাত কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেয়। এ নিয়ে খুলনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস জানান, নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরসহ ৫/৬ জন বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে নয়বাটি রেল লাইনের ওপর যায়। সেখানে তারা রেল লাইনের ফিসপ্লেট খোলার লক্ষ্যে লাইনের ২/৩টি বড় সাইজের নাটবল্টু খুলে ফেলে। এসময় ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী পথচারীদের সন্দেহ হলে তারা ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে যান।
এ সময় রেল লাইনের ফিসপ্লেট খোলা হচ্ছে দেখে পথচারীরা সঙ্গে সঙ্গে জাহাঙ্গীরকে ধরে ফেলে। তবে তার সঙ্গীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। জাহাঙ্গীরকে ধরার পর এলাকাবাসীও এগিয়ে আসে। পরে সকলে মিলে তাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
ওসি আরও জানান, আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জাহাঙ্গীরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, তার সাথে থাকা বাকি কয়জনকে গ্রেফতার করতে পারলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এলাকাবাসী জানায়, সারাদেশে রেল লাইনে যে নাশকতা করা হচ্ছে তার সাথে সরকারি দলের লোকজন জড়িত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় খুলনায় এ ধরনের কাজ হয়েছে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত মেহেদী হাসান জাহাঙ্গীর নয়বাটি বাংলার মোড়ের বাসিন্দা মৃত জিন্নাত আলীর পুত্র। সে একজন যুবলীগ নেতা। খালিশপুরের অবরোধ বিরোধী মিছিলে সে সক্রিয় থাকে।
খালিশপুর থানা যুবলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রেফতারকৃত মেহেদী হাসান জাহাঙ্গীর যুবলীগের সঙ্গে জড়িত স্বীকার করেন।
এদিকে খুলনা মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে ১৮ দলীয় জোটের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা দেশজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। কিন্তু সরকার তার দলীয় সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের দায়ভার ১৮ দলের নেতাকর্মী ওপর চাপিয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, বুধবার রাতে খালিশপুর থানার নয়াবাটি এলাকায় যুবলীগ সদস্য জাহাঙ্গীর একাধিক মামলার আসামী, খালিশপুর এলাকার ত্রাস কাউট-হোয়াইট বাহিনীর সদস্য মেহেদী হাসান জাহাঙ্গীর রেল লাইনের ফিসপ্লেট খুলে নাশকতার চেষ্টাকালে জনতার হাতে ধরা পড়ে। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ তাকে গণপিটুনী দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
আর কত অভিনয়! আর কত সাধারণ মানুষের জীবন??????
১৮ দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে শাসকলীগের সন্ত্রাসীরা যে নাশকতা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে যুবলীগ সদস্য জাহাঙ্গীর আটকের মাধ্যমে তার প্রমান স্পষ্ট হয়েছে। বিবৃতিদাতারা এ ধরনের নাশকতার পথ পরিহার করার জন্য শাসকলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
উল্লেখ্য, বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে খুলনার ফুলতলা উপজেলার যুগ্মীপাশাতে রেলের ফিসপ্লেট খুলে ফেলায় ইঞ্জিনসহ নকশিকাঁথা ট্রেনের ৬টি বগি লাইনচ্যুত হয়। যা প্রায় ৩০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আবার সচল করা হয়েছে।
উৎসঃ [url href="http://http://www.latestbdnews.com/archives/10436[url href="লেটেস্ট বিডি নিউজ"
বিষয়: বিবিধ
১১২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন